নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের জন্য আন্তর্জাতিক দরজা দিন দিন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। একসময় যে পাসপোর্টে গর্ব করত প্রবাসী ও বিদেশগামী নাগরিকরা, আজ সেটিই হয়ে দাঁড়িয়েছে ভোগান্তির প্রতীক। সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশ বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা প্রদান প্রক্রিয়া ‘অস্থায়ীভাবে স্থগিত’ করেছে। ফলে প্রবাসে কর্মসংস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার সুযোগ হারাচ্ছেন হাজারো নাগরিক।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অবৈধ ও অকার্যকর ইউনূস প্রশাসনের নীতি ও আচরণের কারণেই আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি তলানিতে ঠেকেছে। মানবাধিকার লঙ্ঘন, দুর্নীতি, দমন-পীড়ন এবং বিদেশি চাপের কাছে নতজানু কূটনীতি—এসবের কারণে বাংলাদেশের প্রতি আস্থা হারাচ্ছে বিশ্ব সম্প্রদায়।
বিদেশি সংবাদমাধ্যমগুলোর রিপোর্টে উল্লেখ করা হচ্ছে, “বাংলাদেশ এখন আফগানিস্তানের পর্যায়ে নেমে যাচ্ছে”—এমন উদ্বেগ আন্তর্জাতিক মহলেও স্পষ্ট। অনেক দেশ তাদের অভিবাসন নির্দেশিকায় বাংলাদেশকে ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা বর্তমানে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অতিরিক্ত যাচাই-বাছাই, ইন্টারভিউ ও নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখোমুখি হচ্ছেন। কেউ কেউ জানিয়েছেন, আগের মতো সহজে ট্রানজিট ভিসা বা স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি কিছু দেশে ব্যবসায়িক ভিসার আবেদনও বাতিল হচ্ছে কোনো কারণ ছাড়াই।
অবৈধ ইউনূস প্রশাসনের তথাকথিত ‘সংস্কার’ এখন দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ককে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ কয়েকটি দেশ বাংলাদেশের ভিসা প্রক্রিয়ায় কঠোরতা আরোপ করেছে। বিদেশি ব্যাংকগুলোও এখন বাংলাদেশি অ্যাকাউন্টধারীদের লেনদেনে অতিরিক্ত নজরদারি করছে।
একজন ভিসা প্রত্যাশী বলেন, “আগে দুবাই বা মালয়েশিয়ার ভিসা পাওয়া ছিল সহজ, এখন বাংলাদেশ পাসপোর্ট দেখলেই সন্দেহ করে। তারা বলে—আপনার দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনিশ্চিত।”
দেশের তরুণ প্রজন্ম যারা পড়াশোনা বা চাকরির স্বপ্ন নিয়ে বিদেশে যেতে চায়, তারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের আন্তর্জাতিক পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হতাশা বাড়ছে সমাজে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সংকট কেবল কূটনৈতিক নয়—এটি রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতার প্রতিফলন। অবৈধ প্রশাসনের ভুল নীতি ও নৈতিক দেউলিয়াত্বের কারণে বাংলাদেশের পাসপোর্ট আজ প্রশ্নবিদ্ধ।
বাংলাদেশকে আবারও আন্তর্জাতিক মর্যাদায় ফিরিয়ে আনতে হলে অবিলম্বে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা, স্থিতিশীল কূটনীতি এবং বিশ্ববাসীর আস্থা পুনরুদ্ধারের বিকল্প নেই।